শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২২। করোনা ভাইরাস মহামারীর সময়ে আমরা উপলব্ধি করেছি যে আমাদের প্রতিদিনের মানসিক সমস্যাগুলির বিষয়ে সচেতন হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটিকে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের জন্য আমাদের আরও দীর্ঘ পথ হাঁটতে হবে। ইতিমধ্যে ২০১৯ সালে (মহামারীর আগে) বিশ্বব্যাপী আনুমানিক আটজনের মধ্যে একজন মানসিক সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করছিলেন (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)। একই সময়ে, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য পরিষেবা, দক্ষতা এবং বাজেটের স্বল্পতা ছিলো এবং যা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম ছিলো। বিশেষত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে কোভিড-১৯ মহামারী মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী সঙ্কট তৈরি করেছে; স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী চাপকে বাড়িয়েছে ও লক্ষ লক্ষ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকে দুর্বল করেছে।
মহামারীর প্রথম বছরে উদ্বেগ ও হতাশাজনিত সমস্যা ২৫% এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)। একই সময়ে, মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য, দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব, সহিংসতা এবং জনস্বাস্থ্যের জরুরী অবস্থা বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য কে প্রভাবিত করে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আমাদের সমস্ত অগ্রগতি ও অর্জনকে হুমকির মুখে ফেলে।
মানসিক স্বাস্থ্য একজন ব্যক্তির চিন্তাভাবনা, আচরণ ও অনুভূতিকে প্রভাবিত করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে কোনো শারীরিক সমস্যা বা শারীরিক আঘাতের চেয়ে মানসিক সমস্যা বা আঘাত শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। আমাদের শরীর, মন ও সুস্থতা আমাদের মানসিক স্থিতিশীলতার উপর নির্ভর করে। যদি মানসিক স্বাস্থ্যের সঠিক যত্ন না নেওয়া হয় তবে এটি শারীরিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এমনকি কর্মক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। ব্যক্তি, সম্প্রদায়/ জাতি ও সরকার হিসাবে আমরা মানসিক স্বাস্থ্যকে যে গুরুত্ব প্রদান করি তা আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং আরও বেশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। আমাদের অবশ্যই মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়াকে আরো শক্তিশালী করতে হবে ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সকল সেবা সহজলভ্য, সাশ্রয়ী এবং মানসম্পন্ন করতে হবে এবং একটি কমিউনিটি-ভিত্তিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে হবে।
লেখক-॥ ডাঃ তানভীরুজ্জামান , চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।